ইফতারে আনার আছে তো?

তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় হয়েছে; গরম কিন্তু যায়নি। অন্যদিকে দিনের দৈর্ঘ্য এখনো বাড়ার দিকেই। এমন দিনে ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া না খাওয়াই ভালো। বরং বুদ্ধিমানের কাজ হবে, যদি ফলমূলে মনোযোগী হওয়া যায়। তাই রমজান মাসজুড়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ। আজ থাকছে উপকারী ফল ডালিম বা আনার—
পুষ্টি উপাদান : গুরুত্বপূর্ণ সব পুষ্টি উপাদানে পূর্ণ আনার। চায়ের কাপের এক কাপ আনার খেলে মিলবে সাত গ্রাম ফাইবার, তিন গ্রাম প্রোটিন, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘সি’-এর ৩০ শতাংশ, ভিটামিন ‘কে’র ৩৬ শতাংশ, ফোলেটের ১৬ শতাংশ এবং পটামিয়ামের ১২ শতাংশ। এর বিচিগুলোও বেশ মিষ্টি। এর সঙ্গে মিলবে ২৪ গ্রাম চিনি আর ১৪৪ ক্যালোরি।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : ডালিমে রয়েছে দুটো অনন্য উপাদান—পুনিকালাজিন্স আর পুনিসিক এসিড। স্বাস্থ্যের দেখভালে এরা অতুলনীয়। এ দুটোই রয়েছে ডালিমে। প্রথমটি এক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি আনারের রস আর ছালে পাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি আনারের বিচির তেল নামেও পরিচিত। বিচিতে মূলত ফ্যাটি এসিড থাকে। আরো থাকে লিনোলেইক এসিড। সবই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
নানা রোগের লড়াই : প্রাণঘাতী বহু রোগের সমাগম ঘটাতে পারে ‘ক্রনিক ইনফ্লেমেশন’। দেখা দিতে পারে হৃদরোগ, ক্যান্সার, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, আলঝেইমার্স, এমনকি স্থূলতাও। আনারের পুনিকালাজিন্সের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কিন্তু অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবেও কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, হজম প্রক্রিয়া, স্তন ও কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষগুলোর প্রদাহ কমায় আনার।
ক্যান্সারবিরোধী : পুরুষরা যে ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, তার মধ্যে অতি সাধারণ হলো প্রোস্টেট ক্যান্সার। গবেষণাগারে দেখা গেছে, আনার থেকে বের করা এক ধরনের নির্যাস নতুন কোষে ক্যান্সারের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। এমনকি কিছু আক্রান্ত কোষের মৃত্যুও ঘটাতে সক্ষম। প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্তদের রক্তে পিএসএর (প্রোস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন্ট) মাত্রা খুব অল্প সময়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। কিন্তু এক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে, প্রতিদিন ২৩৭ মিলিলিটার আনারের রস খেলেই পিএসএর মাত্রা দ্বিগুণ হওয়ার সময় ১৫ মাস থেকে ৫৪ মাসে পিছিয়ে যায়।
হার্ট অ্যাটাক : এর নেপথ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। এক পরীক্ষায় দেখা যায়, টানা দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন মাত্র ১৫০ মিলিলিটার করে ডালিমের রস খাওয়ার ফলে রক্তচাপ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে।
স্মৃতিশক্তি : এই ফল স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সক্ষম। সার্জারির বেশ কয়েকজন রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, আনার খাওয়ার ফলে তাদের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের হার অনেকটাই কমে গেছে।
দাঁতের যত্নে : দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিতে আনার খেতে পারেন। প্লাকের প্রভাব থেকে দাঁত রক্ষা করা এবং বিভিন্ন মুখের রোগ থেকে পরিত্রাণ দেয় আনার। কারো রক্তস্বল্পতা থাকলেও এই ফলের দ্বারস্থ হতে পারেন। এটি রক্তে আয়রন সরবরাহ করে। ডায়াবেটিসের জন্যও উপকারী।

Post a Comment

Previous Post Next Post